Table of Contents
বই পড়া সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
মূল বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন
১। জাতীয় জীবনধারা গঙ্গা-যমুনার মতোই দুই ধারায় প্রবাহিত। এক ধারার নাম আত্মরক্ষা বা স্বার্থপ্রসার, আরেক ধারার নাম আত্মপ্রকাশ বা পরমার্থ বৃদ্ধি। একদিকে যুদ্ধবিগ্রহ, মামলা-ফ্যাসাদ প্রভৃতি কদর্য দিক; অপরদিকে সাহিত্য, শিল্প, ধর্ম প্রভৃতি কল্যাণপ্রদ দিক। একদিকে শুধু কাঁজের জন্য কাজ। অপরদিকে আনন্দের জন্য কাজ। একদিকে সংগ্রহ, আরেক দিকে সৃষ্টি। যে জাতি দ্বিতীয় দিকটির প্রতি উদাসীন থেকে শুধু প্রথম দিকটির সাধনা করে, সে জাতি কখনও উঁচু জীবনের অধিকারী হতে পারে না।
ক. ‘ভাঁড়েও ভবানী’ অর্থ কী?
খ. অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যে দিকটিকে ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মতকে সমর্থন করে”- মন্তব্যটির বিচার করো।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক) ‘ভাঁড়েও ভবানী’ অর্থ হলো- রিক্ত বা শূন্য।
খ) ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে মানুষের আত্মিক শক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
মানুষের ভেতরে দুই ধরনের শক্তি থাকে একটি হলো শরীরের শক্তি (দৈহিক শক্তি), আর অন্যটি হলো মনের শক্তি (আত্মিক শক্তি)। আত্মিক শক্তির মাধ্যমে মানুষ নিজের মনকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারে। এই শক্তি মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সব ভালো গুণ ও শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। তাই আত্মিক শক্তিকে অন্তরের শক্তি বা ভেতরের শক্তি বলা হয়।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের ফুটে ওঠা অর্থচিন্তার দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক দেখিয়েছেন, মানুষ সাহিত্যচর্চাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না। তার কারণ, আমাদের দেশের অনেক মানুষ গরিব, তাই তারা টাকা-পয়সার চিন্তাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আনন্দ বা মন-মানসিকতার উন্নতির জন্য যে বই পড়া দরকার, সেটা তারা ভাবে না। এই অভ্যাসটাই আমাদের মনের বিকাশে বাধা দেয়।
উদ্দীপকে মানুষের জীবনকে দুটি দিক দিয়ে বোঝানো হয়েছে। একদিকে মানুষ নিজের লাভ বা স্বার্থকেই বড় মনে করে। যার ফলে যুদ্ধ, ঝগড়া বা মামলার মতো খারাপ ঘটনা ঘটে। ঠিক এই দিকটার সঙ্গে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মানুষ টাকা ছাড়া অন্য কিছুকে তেমন দরকারি ভাবে না। তাই সাহিত্যচর্চা বা আনন্দের বিষয় থেকে তারা দূরে থাকে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, উদ্দীপকে যেটা আত্মরক্ষা বা স্বার্থের দিক বলা হয়েছে, সেটাই প্রবন্ধে লেখক বলেছেন অর্থকেন্দ্রিক চিন্তা হিসেবে।
ঘ) ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে মানুষের আত্মার বিকাশকে প্রাধান্য দিয়েছেন, যা উদ্দীপকে বর্ণিত পরমার্থ বৃদ্ধির দিকটিকে সমর্থন করে।
‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, শিক্ষা শুধু চাকরি বা টাকার জন্য নয়। এটা আত্মিক উন্নতির জন্যও দরকার। আর এই আত্মিক উন্নতির সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সাহিত্যচর্চা। কারণ, সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষ জীবনের নানা দিক সম্পর্কে জানে, মনের বিকাশ ঘটে এবং ভালো মানুষ হওয়া সম্ভব হয়।
উদ্দীপকেও বলা হয়েছে, জাতিকে উন্নত করতে হলে শুধু কাজ করলেই হবে না। সৃষ্টি, আনন্দ, মূল্যবোধের চর্চাও জরুরি। এজন্য সাহিত্য, শিল্প বা ধর্মের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে “পরমার্থ বৃদ্ধির” অর্থ হলো—জীবনের গভীর ও সত্যিকারের উন্নতি।
লেখক মনে করেন, আমাদের সমাজ এখনো টাকাকে বেশি গুরুত্ব দেয়, আর জ্ঞান বা সাহিত্যকে অবহেলা করে। কিন্তু উন্নত জাতি হতে হলে জ্ঞানচর্চা দরকার, আর তার জন্য বই পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে পরমার্থ বৃদ্ধির কথা বলা আর প্রবন্ধে সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব বোঝানো দুটোই একই চিন্তা প্রকাশ করে। সে কারণে প্রশ্নে বলা মন্তব্যটি একদম ঠিক।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন
২। লাইব্রেরির মধ্যে আমরা সহস্র পথের চৌমাথার উপরে দাঁড়াইয়া আছি। ‘কোনো পথ অনন্ত সমুদ্রে গিয়েছে, কোনো পথ অনন্ত শিখরে উঠিয়াছে, কোনো পথ মানব হৃদয়ের অতল স্পর্শে নামিয়াছে। যে যে দিকে ধাবমান হও, কোথাও বাধা পাইবে না। মানুষ আপনার পরিত্রাণকে এতটুকু জায়গার মধ্যে বাঁধিয়া রাখিয়াছে।
ক. ‘সুসার’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের আত্মা বাঁচে না।’- কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন বিশেষ দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে করো ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের মূলভাব উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে? উত্তরের সপক্ষে মতামত দাও।
৩। বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের মনোজগৎকে পরিশুদ্ধ করতে পারি। বই পড়ার সবচেয়ে সুন্দর স্থান হলো লাইব্রেরি। লাইব্রেরি ব্যতীত বই পড়ার আর কোনো উপযুক্ত স্থান নেই। সেখানে মুক্তভাবে সাহিত্যচর্চা করে জ্ঞান লাভ করা যায়।
ক. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখক কোনটিকে মনের হাসপাতাল বলেছেন?
খ. ‘যে জাতি মনে বড়ো নয়, সে জাতি জ্ঞানেও বড়ো নয়- কেন?
গ. উদ্দীপকে বই পড়ার সাথে লাইব্রেরির কোন সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘লাইব্রেরিতে পাঠচর্চা আমাদেরকে সুশিক্ষিত করে তুলতে পারে।’- উদ্দীপকের শিক্ষার্থীদের এ মন্তব্যটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে বিচার করো।
৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোতা কাহিনী’ গল্পের রাজা শখ করে একটি তোতা পাখি কিনে তাকে শিক্ষার ব্যবস্থা করলেন। পাখিটিকে শিক্ষিত করার জন্য বিখ্যাত সব পণ্ডিতকে নিয়োগ দেওয়া হলো। মহাসমারোহে চলতে লাগল শিক্ষা-আয়োজন। পণ্ডিতেরা জোর করে তোতার মুখে পুস্তকের পাতা পুরে দিতে লাগলেন। অবশেষে একদিন তোতাটি মারা গেল।
ক. ‘বিদ্যার সাধনা’ কাকে অর্জন করতে হয়?
খ. ‘ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়।’- কেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সাদৃশ্যগত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের মূলভাবের প্রতিফলন ঘটেনি।”- ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো।
৫। জনাব হানিফ সাহেব চাকুরির অবসরে এসে যত টাকা পেয়েছিলেন, তার পুরোটাই নিজের বাড়ির পাশে নতুন লাইব্রেরি তৈরির কাজে ব্যয় করেছেন। এতে অনেকেই বিস্মিত হয়েছে। এখন সেখান থেকে অনেক মানুষ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বই, পত্রিকা, জার্নাল পড়ে জ্ঞানার্জন করছে।
ক. নীতির চর্চা কোথায় করতে হয়?
খ. ‘গুরু উত্তরসাধক মাত্র’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সমগ্রভাবকে ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৬। জনাব জুনায়েদ সাহেব তাঁর সমুদয় সঞ্চয় নিজের বাড়ির পাশে নতুন লাইব্রেরি তৈরির কাজে ব্যয় করেছেন। এতে অনেকেই বিস্মিত হয়েছে। এখন সেখান থেকে অনেক মানুষ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বই, পত্রিকা, জার্নাল পড়ে জ্ঞানার্জন করছে।
ক. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী?
খ. ‘শিক্ষক তার জ্ঞানতৃষ্ণাকে প্রজ্বলিত করতে পারেন।’- কথাটি। বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ: “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাবকে ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৭। অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ একজন আলোর ফেরিওয়ালা। পাঠাভ্যাস বৃদ্ধির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই আলো ফেরি করে চলছেন। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি দেশব্যাপী তাঁর এই আলো ‘ফেরি করার একটি চমৎকার মাধ্যম। এই লাইব্রেরির মাধ্যমে। বিভিন্ন বয়সি মানুষের পাশাপাশি অনেক শিশু-কিশোরও বই পড়ার প্রতি। আগ্রহী হয়ে উঠছে। এখান থেকে তারা কেবল বই পড়ছেই না, বই কিনতেও উৎসাহী হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ, গল্প, গোয়েন্দা ও ভ্রমণকাহিনি, ছড়া, কবিতা, নাটক, উপন্যাস ও সায়েন্সফিকশন পড়ে। এভাবেই তারা দিনে দিনে আলোকিত মানুষ হয়ে উঠছে।
ক. মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখের নাম কী?
খ. সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের অংশবিশেষের বর্ণনামাত্র।”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।
৮। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ডানা সাহিত্য পড়তেই বেশি আগ্রহী। বাবার সাথে একুশের বইমেলায় গিয়ে সে বাংলা সাহিত্যের বইগুলোই কেনে। তার এই সাহিত্যপ্রীতিকে আরও শানিত করার জন্য তার বাবা তাকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারে ভর্তি করিয়ে দেন। তিনি সাহিত্য পড়ার ব্যাপারে ডানাকে অনুপ্রাণিত করে বলেন, জ্ঞানরাজ্যের এক সমৃদ্ধ অঙ্গ হলো সাহিত্য। সাহিত্য ছাড়া কোনো জাতিই বিকশিত হতে পারে না। তবে এর জন্য প্রয়োজন সাহিত্যের বাতিঘর প্রতিষ্ঠা করা।
ক. ‘শৌখিন’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের উপর স্থান দিয়েছেন কেন? বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের ডানার বাবার মধ্যে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের কোন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের বাবার অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যটিতে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে।”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ করো।