Table of Contents
মানুষ মুহম্মদ স সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
মূল বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন
হজরত নূহ (আ) ধর্ম ও ন্যায়ের পথে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এতে মাত্র চল্লিশ জন মানুষ সাড়া দেন। বাকিরা সবাই তাঁর বিরোধিতা শুরু করে নানা অত্যাচারে তাঁকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এ অত্যাচারের মাত্রা সহনাতীত হলে তিনি একপর্যায়ে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান। আল্লাহর হুকুমে তখন এমন বন্যা হয় যে, ঐ চল্লিশ জন বাদে সকল অত্যাচারী ধ্বংস হয়ে যায়।
ক. হজরত মুহম্মদ (স.) কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘সুমহান প্রতিশোধ’ বলতে কী বোঝায়?
গ. হজরত নূহ (আ) যেদিক দিয়ে হজরত মুহম্মদ (স.) থেকে ভিন্ন তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. হজরত নূহ (আ)-এর চরিত্রে কী ধরনের পরিবর্তন আনলে হজরত মুহম্মদ (স.)-এর একটি বিশেষ গুণ তাঁর মধ্যে ফুটে উঠত? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক) হজরত মুহম্মদ (স.) মক্কার শ্রেষ্ঠ কোরেশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন।
খ) পরাজিত মক্কাবাসীকে ক্ষমা করে হজরত মুহম্মদ (স.) যে দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন তাকেই সুমহান প্রতিশোধ বলা হয়েছে।
মক্কার লোকেরা তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছিল, নানা ভাবে অত্যাচার করেছিল। কিন্তু যখন হজরত মুহম্মদ (স.) মক্কা জয় করলেন, তখন তিনি সেই লোকদের শাস্তি না দিয়ে সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন। তিনি বললেন, “তোমাদের প্রতি আমার কোনো রাগ নেই।” এইভাবে ক্ষমা করাই ছিল তাঁর আসল প্রতিশোধ, কারণ যারা তাকে কষ্ট দিয়েছিল, তিনি তাদের ভালোবাসা ও দয়ায় জয় করেছিলেন। এই ক্ষমাই ছিল সুমহান প্রতিশোধ।
গ) সহনশীলতা ও ক্ষমাশীলতার দিক থেকে হজরত নূহ (আ) হজরত মুহম্মদ (স.) থেকে ভিন্ন।
মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর লেখা ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, হজরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন খুব ক্ষমাশীল ও সহনশীল একজন মানুষ। মক্কার লোকেরা তাঁকে অনেক কষ্ট দিলেও তিনি তাদের কখনো বদদোয়া দেননি। এমনকি তায়েফে গিয়ে যখন তিনি রক্তাক্ত হলেন, তখনও তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। কোনো পরিস্থিতিতেই তিনি ধৈর্য হারাননি, সব সময় ক্ষমা ও সহনশীলতার উদাহরণ হয়ে থেকেছেন।
অন্যদিকে, উদ্দীপকে হজরত নূহ (আ)-এর কথা বলা হয়েছে। তিনিও সত্য কথা বলার জন্য অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু শত্রুরা যখন খুব বেশি জুলুম করল, তখন তিনি আল্লাহর কাছে তাদের ধ্বংস চেয়েছিলেন। তাঁর ফরিয়াদে সব অত্যাচারী ধ্বংস হয়ে যায়।
তাই দেখা যায়, হজরত নূহ (আ)-এর আচরণ আর মহানবি মুহম্মদ (স.)-এর ক্ষমাশীল আচরণ এক নয়। এক্ষেত্রে মুহম্মদ (স.) ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের উদাহরণ, যিনি সব সময় ক্ষমা করেছেন।
ঘ) হজরত নূহ (আ) অধিকতর ক্ষমাশীল ও সহনশীল হলে তাঁর মাঝে হজরত মুহম্মদ (স.)-এর চারিত্রিক গুণাবলি ফুটে উঠত।
মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী রচিত ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে হজরত মুহম্মদ (স.)-এর চারিত্রিক গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁর চরিত্রে ছিল ক্ষমা, ত্যাগ, ধৈর্য, প্রেম আর দয়া। তিনি কখনো কারো উপর রাগ করেননি, এমনকি শত্রুরা তাঁকে আঘাত করলেও তিনি কাউকে বদদোয়া দেননি।
হজরত নূহ (আ) ও হজরত মুহম্মদ (স.)দুজনেই মহান নবি। তাঁরা সত্যের কথা বলার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। কিন্তু হজরত নূহ (আ) একসময় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন যেন তাঁর শত্রুরা ধ্বংস হয়ে যায়। আল্লাহ তাঁর ফরিয়াদ কবুল করেন এবং অত্যাচারীদের ধ্বংস করেন।
হজরত নূহ (আ)-এর মধ্যে সহনশীলতা ও ক্ষমার গুণ কিছুটা কম ছিল। যদি তাঁর মধ্যেও আরও ক্ষমা ও ধৈর্য থাকত, তাহলে তাঁর চরিত্রেও হজরত মুহম্মদ (স.)-এর মতো অসীম ক্ষমাশীলতার দৃষ্টান্ত দেখা যেত।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন
২। পাপী মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করা সহজ কথা নয়। এতে অনেক যত্ন, অনেক সতর্কতা এবং মানব-প্রকৃতি ও স্বভাব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা। চাই। এমনকি যিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন তাঁকে আপনার স্বার্থ পর্যন্ত বিস্মৃত হতে হয়। এ সংসারে প্রেমই হৃদয় রাজ্যের অদ্বিতীয় ঈশ্বর। শিশু-প্রবীণ, ধনী-নির্ধন, পাপী-সাধু সকলেই এককথায় ভালোবাসার দাস। অন্যের মনে প্রভুত্ব করতে হলে, অন্যের হৃদয়ে নিজের স্থান করে নিতে চাইলে। ভালোবাসার দ্বারাই তার পথ প্রশস্ত করতে হয়; তাকে আবদ্ধ করতে হয় ভালোবাসার বন্ধনে। কেননা, এ পৃথিবীর সকলেই ভালোবাসা প্রত্যাশী।। বস্তুত, সহৃদয়তা ছাড়া পরের উপকার করা যায় না এবং সর্বময় স্নেহের অভাবে সদ্গুণসম্পন্ন মানুষও ব্যর্থ হতে পারে। তাই বলা যায়, ভালোবাসা দিয়েই মানুষের হৃদয় জয় করা সম্ভব।
ক. ছাত্রজীবনে মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী কোন আন্দোলনে যোগ দেন?
খ. ‘সুমহান প্রতিশোধ’ বলতে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপক ও ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের হজরত মুহম্মদ (স.)-এর সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধরো।
ঘ. “ভালোবাসা দিয়েই মানুষের হৃদয় জয় করা সম্ভব’- উদ্দীপকের এ কথাটি ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের হজরত মুহম্মদ (স.)-এর জীবনের নানা ঘটনা দ্বারা প্রমাণিত।”- মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
৩। ধৈর্যের মূর্ত প্রতীক ছিলেন হজরত আইয়ুব (আ.)। বছরের পর বছর শারীরিক ও আর্থিক কষ্টে ভুগেও মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞ ‘ছিলেন। তিনি যখন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন, তখন তাঁর সন্তান-সন্ততি, বন্ধুবান্ধব সবাই উধাও হয়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে রোগ-ব্যাধি, দুঃখকষ্ট যত বাড়তে থাকে, আইয়ুব (আ.) তত বেশি আল্লাহর জিকির দিয়ে তাঁর দেহ ও অন্তর তরতাজা রাখেন। বিপদে ধৈর্যধারণ এবং আল্লাহর পরীক্ষা হাসিমুখে বরণ করে তিনি ‘সবরকারী’ ও ‘চমৎকার বান্দা’ খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন।
ক. হজরত মুহম্মদ (স.) আবাল্য কী হিসেবে পরিচিত ছিলেন?
খ. কেন অন্ধ লোকটির প্রতি মুহম্মদ (স.)-এর বিরক্তি প্রকাশ পেয়েছিল?
গ. উদ্দীপকে মুহম্মদ (স.)-এর চরিত্রের যে আদর্শবোধের প্রতিফলন ঘটেছে তা বর্ণনা করো।
ঘ. ‘উদ্দীপকে উল্লিখিত গুণাবলি ছাড়াও হজরত মুহম্মদ (স.) অন্যান্য গুণে গুণান্বিত ছিলেন।’- ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৪। ইমাম হাসান (রা.) স্ত্রীর দেওয়া বিষপানে মৃত্যুকালে তাঁর বিষদাতার পরিচয় জানতে পেরেও তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোমাকে বড়োই ভালোবাসিতাম, স্নেহ করিতাম, তাহার উপযুক্ত কার্যই তুমি করিয়াছ। তোমার চক্ষু হইতে হাসান চিরতরে বিদায় হইতেছে। সুখে থাকো-তোমাকে আমি ক্ষমা করিলাম।’
ক. সাফা ও মারওয়া কোথায় অবস্থিত?
খ. সুমহান প্রতিশোধ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘প্রতিফলিত দিকটি ছাড়াও হজরত মুহম্মদ (স.) অন্যান্য গুণে গুণান্বিত ছিলেন।’ মন্তব্যটি ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৫। চেয়ারম্যান জুলমত বদমেজাজি লোক। সবসময় অশালীন ভাষায় সে মানুষকে অপমান করে। ক্ষমতার দাপটে সে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। ভয়ে কেউ তার কাছে ঘেঁষতে সাহস পায় না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার হওয়ার কথা ছিল সবার জন্য নিরাপদ আশ্রয়। মহানবি (স.)-এর আদর্শের সাথে তার পরিচয় থাকলে নিশ্চয়ই তার কাছে থেকে সহানুভূতিশীল আচরণই পাওয়া যেত।
ক. মনুষ মুহম্মদ (স.) প্রবন্ধে ‘স্থিতধী’ বলা হয়েছে কাকে?
খ. মহানবি (স.) মানুষের একজন হয়েও দুর্লভ কেন?
গ. কোন দিক থেকে উদ্দীপকের জুলমত চেয়ারম্যান মহানবি (স.)-এর আদর্শের পরিপন্থি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘মহানবি (স.)-এর আদর্শকে ধারণ করলে উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের কাছ থেকেও সহানুভূতিশীল আচরণই পাওয়া যেত।’ উক্তিটি ‘মনুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৬। হায়দার সাহেব একদিন একটি পার্কে বসেছিলেন। হঠাৎ একটি লোক তার কাছে বলে, ‘আমি তিন দিন ধরে কিছু খাইনি, আমার কাছে বোনো টাকাপয়সা নাই।’ হায়দার সাহেবের দয়া হলো। হলেন। তিনি লোকটিকে কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করলেন ক. সকলের মহাযাত্রা কার দিকে?
খ. ‘এদের জ্ঞন দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর।’- বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে হায়দার সাহেবের কর্মকাণ্ডে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? বর্ণনা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের সমগ্রতা ধারণ সক্ষম নয়।”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।
৭। দেলোয়ার সাহেব অত্যন্ত সৎ ও বিচক্ষণ মানুষ হিসেবে সবার। কাছে পরিচিত। তিনি, তাঁর কর্মস্থলে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব। পালন করায় কিছু সহকর্মী বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং সুযোগ পেলেই ক্ষতি করার চেষ্টা করে। দেলোয়ার সাহেব সব বুঝতে পারলেও। তাঁর অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াননি বরং সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
ক. কার শিথিল অঙ্গ মাটিতে লুটাইল?
খ. ‘আমি রাজা নই, সম্রাট নই, মানুষের প্রভু নই।’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সহকর্মীদের বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের কোন দিকটিতে আলোকপাত করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের দেলোয়ার সাহেবের মাঝে যে গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়, তা ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো।
৮। খলিফা উমর (রা) অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছে তখতে বসে খেজুর পাতার প্রাসাদ তাঁর বার বার খসে গেছে সাইমুম ঝড়ে। তাঁর কুটির নুয়ে পড়েছে কিন্তু তিনি নুয়ে পড়েননি। জগতের কোনো লোড-লালসা, বিলাস-বাসনা, ঐশ্বর্যের নেশা তাঁকে ছুঁতে পারেনি।
ক. ‘পুলকদীপ্তি’ অর্থ কী?
খ. ‘সুমহান প্রতিশোধ’ বলতে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের চেয়ে ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের ভাব অধিকতর গভীর ও ব্যাপক।”- মন্তব্যটির সাথে তুমি কি একমত? যুক্তিসহ লেখো।