Skip to content

একুশের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর (পিডিএফ সহ)

একুশের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

একুশের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

মূল বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

১। মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ। করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করা স্বাধীনচেতা, দুরন্ত, টগবগে এক তরুণ। ১৯৭১ সালে যোগ দিলেন ক্রাক প্লাটুনে। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন উড়িয়ে দেওয়াসহ বেশ কিছু অভিযানে সফলতা দেখালেন। কিন্তু ৩০ আগস্ট ধরা পড়লেন পাকবাহিনীর হাতে। সহযোদ্ধাদের তথ্য নেওয়ার জন্য তার উপরে চালানো হলো অমানুষিক অত্যাচার-নির্যাতন। কিন্তু মুখ খুললেন না আজাদ, সব কিছু সহ্য করলেন দাঁতে দাঁত কামড়ে। তার মা সাফিয়া বেগম রমনা থানায় তার সাথে দেখা করতে এলে ভাত খেতে চেয়েছিলেন আজাদ। কিন্তু পরের দিন সাফিয়া বেগম ভাত নিয়ে গেলে ছেলেকে আর খুঁজে পাননি। ছেলেকে ভাত খাওয়াতে না পারার কষ্টে আজাদের মা সারা জীবন আর ভাত খাননি।
ক. গল্পকথকের সাথে তপুর শেষ দেখা হয়েছিল কোথায়?
খ. তপু ফিরে আসায় সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের আজাদের সাথে ‘একুশের গল্প’ রচনার কোন চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. যুগে যুগে আজাদ, তপু, রাহাত, গল্পকথক- এঁরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে যায় কেন? উদ্দীপক ও ‘একুশের গল্প’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক) গল্পকথকের সাথে তপুর শেষ দেখা হয়েছিল হাইকোর্টের মোড়ে।

খ) তপুর ফিরে আসাটা স্বাভাবিক ছিল না বলে সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। চার বছর আগে হাইকোর্টের সামনে মিলিটারি গুলি করে তপুকে মেরে ফেলেছিল। তাই সবাই ভেবেছিল, তপু আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। তার বন্ধুরাও বিশ্বাস করত না, তারা তপুকে আর কোনো দিন দেখতে পাবে। কিন্তু হঠাৎ করে একদিন তপু ফিরে আসে। তার এই অপ্রত্যাশিত ফিরে আসায় সবাই খুব অবাক হয়ে যায় এবং চিন্তায় পড়ে যায়।

গ) উদ্দীপকে যেভাবে আজাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কথা বলা হয়েছে, তা অনেকটাই ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের তপু চরিত্রের সঙ্গে মিলে যায়।

‘একুশের গল্প’-এর তপু একজন সাহসী, স্বপ্নবান তরুণ, যিনি মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি স্ত্রী ও মায়ের কথা ভুলে রাজপথে নেমে আসেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে। তিনি মিছিলে যোগ দেন এবং হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দেন। সেই সময় মিলিটারি তাকে গুলি করে মেরে ফেলে। তপুর কপালে গুলি লাগে এবং মিলিটারি তার মৃতদেহটিও তুলে নিয়ে যায়। তিনি মাতৃভাষার জন্য নিজের জীবন দিয়ে শহিদ হন।

অন্যদিকে, উদ্দীপকে বলা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদের কথা। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এক সাহসী তরুণ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে তিনি দেশকে স্বাধীন করতে লড়াই করেন। পাকিস্তানি সেনাদের হাতে ধরা পড়ে তিনি অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। মায়ের হাতে ভাত চেয়ে খেতে পারলেন না, কারণ তার আগেই প্রাণ দিতে হলো দেশের জন্য।

তপু ও আজাদ—দুজনেই দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। একজন ভাষার জন্য, আরেকজন দেশের স্বাধীনতার জন্য। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আজাদ চরিত্রটি ‘একুশের গল্প’-এর তপুর সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে। দুজনেই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।

ঘ) আজাদ, তপু, রাহাত ও গল্পকথকের মধ্যে একটা মিল আছে। তারা সবাই নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ, ভাষা আর মানুষের মুক্তির জন্য। তাই যুগে যুগে এরা সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে যান, কারণ তাদের হৃদয়ে ছিল গভীর দেশপ্রেম আর শোষিত মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।

‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পে দেখা যায়, তপু, রাহাত ও গল্পকথক। তিনজন বন্ধু ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়। তারা চায় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকেই তারা রাজপথে নামে, স্লোগান তোলে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। মাতৃভাষার জন্য তপু শহিদ হয়। সে ছিল সাহসী ও আত্মত্যাগী একজন তরুণ।

অন্যদিকে, উদ্দীপকে বলা হয়েছে আজাদের কথা। আজাদ ছিলেন একজন শিক্ষিত তরুণ, যিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ‘ক্র্যাক প্লাটুনে’ যোগ দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অনেক সফল অভিযান চালান। পরে ধরা পড়ে ভয়ানক নির্যাতনের শিকার হন, কিন্তু কোনো গোপন তথ্য শত্রুকে দেননি। মায়ের হাতে ভাত খাওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু দেশের জন্য প্রাণ দিতে গিয়ে তা আর সম্ভব হয়নি।

তপু ও আজাদ দুজনেই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। একজন মাতৃভাষার জন্য, আরেকজন দেশের স্বাধীনতার জন্য। রাহাত ও গল্পকথকও দেশের জন্য লড়েছেন ভাষা আন্দোলনের সময়। তাই বলা যায়, যুগে যুগে এভাবেই তপু, আজাদ, রাহাত আর গল্পকথকের মতো সাহসী তরুণেরা দেশের জন্য একসঙ্গে দাঁড়িয়ে যান স্বদেশ, ভাষা ও মানুষের স্বাধীনতার জন্য।

অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন

২। বাংলা বর্ণমালা বড়োই দুঃখিনী। কত কণ্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে, বাংলা বর্ণমালা আজ বিশ্বদরবারে সমাদৃত, স্বীকৃত। একসময় বাংলা ছিল অস্পৃশ্য। ব্রিটিশ বিতাড়নের পর এলো পাকিস্তান। কিন্তু-শোষিত বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস আরও দীর্ঘ হলো। এভাবে দিনের পর দিন অপমান; লাঞ্ছিত হতে হতে বাহান্নে বাঙালি জেগে উঠল। সেই ফাল্গুনে পিচঢালা পথে চলল মিছিল। গগনবিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত আকাশ-বাতাস।
ক. গল্পে কার বরাত মন্দের কথা বলা হয়েছে?
খ. ‘তপু না মরে আমি মরলেই ভালো হতো’ রাহাত কথাটি কেন বলেছিল?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের কোন দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের আংশিক চিত্র তুলে ধরেছে মাত্র।”- বিশ্লেষণ করো।


৩। চিঠিটা তার পকেটে ছিল
ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।
মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা,
তা কি হয়?
ক. তপুকে শেষবারের মতো কোথায় দেখা গিয়েছিল?
খ. তপু ডাক্তারি পাশ করে গাঁয়ে চলে যাওয়ার কথা ভেবেছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের সন্তান ও ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের তপুর মতো তরুণদের প্রত্যয়ী চেতনাই বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।


৪। ওসমান বলে খিজির তুমি না মারা গেছ? রাতের মিছিলে মারা গেছ ভোর তিনটা বাজার আগেই তোমার হাঁ-করা মুখের উপর বড়ো বড়ো মাছি ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছিল। জুম্মন নিজের চোখে দেখেছে তোমার লাশকে মিলিটারি ট্রাকে উঠাতে।
ক. তপুর স্ত্রী কে?
খ. ‘চেনার কোনো উপায় থাকলে তো চিনবে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটিতে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের কোন ঘটনার ছায়াপাত ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের সমগ্র ভাব প্রকাশ করে না।”- যুক্তিসহ তোমার মতামত উপস্থাপন করো।


৫। মুক্তিকামী সাহসী সৈনিকরা বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত। মুক্তির পথ মোটেও সহজ নয় জেনেও তাঁরা এই পথকেই বেছে নেন। যে পথে ডানা ঝাপটায় মৃত্যুদূত। বিপ্লবের মাঠে সেই মৃত্যুদূতকে আলিঙ্গনে দ্বিধাবোধ করে না তাঁরা। তাঁদের মৃত্যু নেই। যুগে যুগে ফিরে আসেন তাঁরা মুক্তিকামী প্রজন্মের মুক্তির প্রেরণায়।
ক. পলকহীন চোখজোড়া দিয়ে অশ্রুর ফোয়ারা নেমেছিল কার?
খ. তপুর মা আর বউকে রাহাত খুঁজে পায়নি কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পে কোন চরিত্রের বিপ্লবী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে? মতামত দাও।
ঘ. ‘যুগে যুগে ফিরে আসে তারা’- উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো।


৬। উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
“ভয় নাই, ওরে ভয় নাই।
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই, তা’র ক্ষয় নাই।”
ক. জহির রায়হান কত সালে নিখোঁজ হন?
খ. তপুকে আবার ফিরে পাওয়ার কথা কেউ কেন কোনোদিনও ভাবেনি?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের যে বিশেষ ইঙ্গিত বহন করে তার বর্ণনা দাও।
ঘ. ‘যুগে যুগে যারা দেশের জন্য জীবন দেয় তারা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকে।’- উদ্দীপক ও ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।


৭। মরণ সাগর পারে তোমরা অমর,
তোমাদের স্মরি।
সংসারে জ্বেলে গেলে যে নব আলোকে
জয় হোক, জয় হোক, তারি জয় হোক-
বন্দিরে দিয়ে গেছ মুক্তির সুধা,
তোমাদের স্মরি।
ক. জহির রায়হানের আসল নাম কী?
খ. ‘বিয়ে করবে নাতো কি সারা জীবন বিধবা হয়ে থাকবে’- কথাটি কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের মূলভাবে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে বীররা চির অমর’- মন্তব্যটি উদ্দীপক ও ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো


৮। এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
মিছিলের সব হাত
কণ্ঠ
পা এক নয়।
সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,
কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার
কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার।
শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে-মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে
ক. তপুর কোন পা ছোটো ছিল?
খ. ‘ওর চোখের ভাষা বুঝতে ভুল হলো না আমার।’- কথাটি কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল?
গ. উদ্দীপকের মিছিলের বর্ণনার সাথে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের কোন বিষয়ের সাদৃশ্য রয়েছে?
ঘ. ‘উদ্দীপকে বর্ণিত অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানই তপু ও তার বন্ধুদের মিছিলে যেতে বাধ্য করেছিল।’- মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।


৯। মায়ের একমাত্র ছেলে সোহেব। মেধায়, সংস্কৃতিমনস্কতায়, রাজনীতি সচেতনতায় তিনি ছিলেন আলোকিত মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তাঁর এই প্রতিভার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটে। বিধবা মা আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে তিনি শহিদ হন। মায়ের আশা ধুলায় লুণ্ঠিত হয়। পুত্র হারানোর শোকে মা সর্বস্বান্ত বোধ করেন। কিন্তু মায়ের মনোজগতে তৈরি হয় হারানো পুত্রের এক কল্পচিত্র। যাপিত জীবনের সব কাজ কর্মে, ভাব-ভাবনায় তিনি তাঁর পুত্রকে দেখতে পান। আর এই বিভ্রমের মধ্যেই তাঁর জীবনযাপন।
ক. তপুর হাতের প্ল্যাকার্ডে কী লেখা ছিল?
খ. ‘ওকে চেনাই যায় না।’- কেন চেনা যায় না? ব্যাখ্যা করো।
গ. তপুকে ফিরে পেয়ে বন্ধুদের মধ্যে যে উপলব্ধি তৈরি হয় তার সঙ্গে উদ্দীপকের সম্পর্ক নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘একুশের গল্প’ ছোটোগল্পের অংশবিশেষের যে স্বাতন্ত্র্য লক্ষ করা যায় তার স্বরূপ-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *