Table of Contents
উমর ফারুক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
মূল বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন
১। কাজী পাড়ার চেয়ারম্যান আব্বাস আলী। একবার তার নির্বাচনি এলাকার অধিকাংশ মানুষ ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু বানভাসি মানুষ একদিনও চেয়ারম্যান সাহেবের দেখা পেলেন না। কারণ তিনি নাকি ঢাকায় জরুরি কাজে ব্যস্ত আছেন। অসহায় লোকগুলো খোলা-আকাশের নিচে বোবা চাউনি মেলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটায়। বন্যা শেষে একদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেয়ারম্যানের বাগানবাড়ি তল্লাশি করে ত্রাণের প্রচুর টিন ও খাদ্যসামগ্রী উদ্ধার করে।
ক. ‘উমর ফারুক’ কবিতা কোন কাব্য থেকে সংকলিত হয়েছে?
খ. হজরত উমরকে ‘আমিরুল মুমেনিন’ বলার কারণ কী?
গ. চেয়ারম্যান আব্বাস আলী যেদিক থেকে হজরত উমরের সঙ্গে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আব্বাস আলী চেয়ারম্যানকে উমরের মতো আদর্শ মানুষ হতে হলে কী কী করতে হবে ‘উমর ফারুক’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক) ‘উমর ফারুক’ কবিতা ‘জিঞ্জীর’ কাব্য থেকে সংকলিত হয়েছে।
খ) মুসলমানদের ধর্মীয় প্রধান ও রাষ্ট্রীয় নেতা হওয়ায় হজরত উমরকে ‘আমির-উল-মুমেনিন’ বলা হয়েছে।
‘আমির-উল-মুমেনিন’ শব্দের অর্থ হলো—বিশ্বাসীদের নেতা। মুসলমানরা এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করে, তাই মুসলমান মানেই একজন বিশ্বাসী। হজরত উমর (রা.) ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা। খলিফা মানে মুসলমানদের ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় নেতা। যেহেতু তিনি মুসলমানদের নেতা ছিলেন, তাই তাকে ‘আমির-উল-মুমেনিন’ বলা হতো, অর্থাৎ বিশ্বাসীদের নেতা।
গ) চেয়ারম্যান আব্বাস আলী এবং হজরত উমর (রা.)-এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
‘উমর ফারুক’ কবিতায় হজরত উমর (রা.)-এর দয়ালু ও দায়িত্বশীল মনোভাবের কথা বলা হয়েছে। তিনি ছিলেন মুসলমানদের খলিফা বা নেতা। একদিন তিনি দেখলেন, এক গরিব মা তার সন্তানদের কান্না থামাতে হাড়িতে শুধু পানি ফুটাচ্ছেন, কারণ ঘরে খাবার নেই। তখন হজরত উমর নিজে বাজার থেকে আটা কিনে তা নিজের কাঁধে করে সেই মায়ের ঘরে নিয়ে যান।
অন্যদিকে, উদ্দীপকে দেখা যায়, চেয়ারম্যান আব্বাস আলী ভয়াবহ বন্যার সময় জনগণের পাশে যাননি। তিনি তখন ঢাকায় জরুরি কাজের অজুহাতে ছিলেন। পরে জানা যায়, তাঁর বাগানবাড়িতে অনেক ত্রাণসামগ্রী মজুত ছিল, যা মানুষকে দেওয়া হয়নি।
তাই বলা যায়, দায়িত্বশীল নেতার মতো বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো হজরত উমরের মতো মহান গুণ আব্বাস আলীর মধ্যে ছিল না। বরং তিনি দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। এই কারণে দুজনের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য বা বৈসাদৃশ্য দেখা যায়।
ঘ) যদি চেয়ারম্যান আব্বাস আলী দায়িত্বশীল আচরণ করতেন এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখাতেন, তাহলে তিনি হজরত উমরের মতো একজন আদর্শ মানুষ হতে পারতেন।
‘উমর ফারুক’ কবিতায় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমরের অনেক ভালো গুণের কথা বলা হয়েছে। তিনি ছিলেন খুবই মানবিক, ন্যায়ের পক্ষে, সাহসী এবং সাধারণ মানুষের মতোই সহজ-সরল জীবন যাপন করতেন। তিনি একজন বড় শাসক হয়েও গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। যেমন—একদিন এক গরিব মা যখন খাবার না পেয়ে সন্তানের কান্নায় অসহায় হয়ে পড়েছিল, তখন হজরত উমর নিজে বাজার থেকে আটা কিনে নিজের কাঁধে করে তা ওই মায়ের ঘরে পৌঁছে দেন।
কিন্তু উদ্দীপকে দেখা যায়, চেয়ারম্যান আব্বাস আলী ঠিক উল্টো কাজ করেছেন। বন্যার সময় যখন তার এলাকার মানুষ কষ্টে ছিল, তখন তিনি পাশে থাকেননি। বরং তিনি ঢাকায় ব্যস্ত ছিলেন এবং পরে তার বাড়িতে মজুত ত্রাণসামগ্রী পাওয়া যায়, যা গরিবদের দেওয়া হয়নি। এতে বোঝা যায়, তিনি দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি।
তবে তিনি যদি হজরত উমরের মতো মানবপ্রেম, দায়িত্ববোধ এবং ন্যায়ের পথ অনুসরণ করেন, তাহলে ভবিষ্যতে তিনিও একজন ভালো ও আদর্শ নেতা হতে পারেন।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন
২। আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?
আমরা যা খুশি তাই করি, তবু তাঁর খুশিতেই চরি,
আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?
রাজা সবারে দেন মান, সে মান আপনি ফিরে পান,
ক. আবু শাহমা কে?
খ. ‘তোমার স্মৃতি যে আজানের ধ্বনি জানে না মুয়াজ্জিন’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘উমর ফারুক’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘হজরত উমর (রা.) যেন উদ্দীপকের রাজারই আরেক রূপ।’- ‘উমর ফারুক’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৩। জমির সাহেব একজন ধনী ব্যক্তি। তিনি প্রয়োজনের বেশি খরচ করা পছন্দ করেন না। তার জামা-কাপড়ের সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত। বাসাবাড়িতে সাধারণত পুরানো জামা-কাপড়ই পরেন। খাবারদাবারেও তিনি অত্যন্ত সংযমী। মাছ হোক বা মাংস-একটির বেশি তরকারি তিনি খাবার হিসেবে গ্রহণ করেন না।
ক. কী অপরাধে হজরত উমর নিজ পুত্রকে দোরা মেরেছিলেন?
খ. কবি আবু শাহমার কবরে গিয়ে হজরত উমরকে সালাম করে চলে আসেন কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘উমর ফারুক’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘জমির সাহেব হজরত উমর (রা)-এর সাথে আংশিক সাদৃশ্যপূর্ণ।’- বিশ্লেষণ করো।
৪। কিন্তু সত্যে তিনি বজ্রের মতো কঠিন, পর্বতের মতো অটল হইলেও করুণায় তিনি ছিলেন কুসুম-কোমল। বৈরীর অত্যাচারে বারবার তিনি জর্জরিত হইয়াছিলেন, শত্রুর লোস্ট্রাঘাতে, অরাতির হিংস্র আক্রমণে বরাদ্দের বসন তাহার বহুবার রক্তরঙিন হইয়া উঠিয়াছে, তথাপি পানী মানুষকে তিনি ভালোবাসিয়াছিলেন, অভিশাপ দেওয়ার চিন্তাও তাহার অন্তরে উদিত হয় নাই। মক্কার পথে-প্রান্তরে পৌত্তলিকের প্রস্তরঘায়ে তিনি আহত হইয়াছেন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে বারবার তিনি উপহাসিত হইয়াছেন; কিন্তু তাহার অন্তর ভেদিয়া একটি মাত্র প্রার্থনার বাণী জাগিয়াছে, ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর।’
ক. ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?
খ. ‘মানুষেরে তুমি বলেছ বন্ধু, বলিয়াছ ভাই, তাই তোমারে এমন চোখের পানিতে, সারি গো সর্বদাই।’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘উমর ফারুক’ কবিতার সাদৃশ্য নিরূপণ করো।
ঘ. ‘হজরত উমর (রা.) ছিলেন হজরত মুহম্মদ (স.)-এর যোগ্য উত্তরসূরি।’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৫। শুধু বিঘে-দুই ছিল মোর ভুঁই, আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, ‘বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।’
কহিলাম আমি, ‘তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই’-
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়োজোর মরিবার মতো ঠাঁই।’
শুনে রাজা কহে, ‘বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখানা,
পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে সমান হইবে টানা-
পরে মাস-দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে-
করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি মিথ্যা দেনার খতে।
এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি,
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
ক. আবু শাহমা কে?
খ. ‘তোমার স্মৃতি যে আজানের ধ্বনি জানে না মুয়াজ্জিন’- বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকের বাবু সাহেবের সাথে ‘উমর ফারুক’ কবিতার বৈসাদৃশ্য নির্দেশ করো।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ দুইটি চরণকে ‘উমর ফারুক’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৬। গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড়ো কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান,
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি,
সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
ক. সাইমুম কী?
‘ভৃত্য চড়িল উটের পৃষ্ঠে উমর ধরিল রশি, মানুষেরে স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া ধুলায় নামিল শশী।’- ব্যাখ্যা করো।
খ. গ. উদ্দীপকের সাথে ‘উমর ফারুক’ কবিতার সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকের সাম্যবাদী চেতনাকে হজরত উমর (রা.)-এর জীবনাদর্শের নিরীক্ষে বিশ্লেষণ করো।
৭। বাবা মারা যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই রাজিব জানতে পারল, তাদের বাড়ির ২০ বছরের বিশ্বস্ত গৃহকর্মী বাবুল মিয়া মাঝেমধ্যেই মিথ্যা কথা বলে এবং বাজার করার নামে টাকাপয়সা চুরি করে। বাড়ির অন্যান্য কাজের লোকের উপরও অযথা হাম্বিতম্বি করে। রাজিব এসব কাজের সত্যতা পেয়ে অগত্যা বাবুল মিয়াকে এককালীন বেশকিছু টাকা দিয়ে চাকরি থেকে বিদায় করে দিলো।
ক. ‘মুয়াজ্জিন’ অর্থ কী?
খ. ‘ইসলাম বলে, সকলে সমান, কে বড় ক্ষুদ্র কেবা’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘উমর ফারুক’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “কিছুটা মিল থাকলেও ‘উমর ফারুক’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনাটির প্রেক্ষাপট ভিন্ন।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৮। শুন হে মানুষ ভাই,
সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’
ক. ‘ফারুক’ অর্থ কী?
খ. ইসলামের দ্বিতীয় খলিফার পরিচয় দাও।
গ. উদ্দীপকের ভাবনার সাথে ‘উমর ফারুক’ কবিতার কবি ভাবনার নার সাদৃশ্য নিরূপণ করো।
ঘ. ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’- পঙ্ক্তিটি ‘উমর ফারুক’ কবিতার আলোকে আলোচনা করো।
আরও দেখুনঃ