Table of Contents
আম আঁটির ভেঁপু সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
মূল বইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন
১। একই পরিবারের মকবুল, আবুল, সুরত সবাই বেশ পরিশ্রমী। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গাচাষ করে, লাকড়ি কাটে, মাঝিগিরি করে, কখনো কখনো অন্যের বাড়িতে কামলা খৈটে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের স্ত্রীরাও বসে নেই। ভাগ্যের উন্নন্নতির জন্য পাতা দিয়ে পাটি বোনে, বাড়ির আঙিনায় মরিচ, লাউ, কুমড়া ফলায়, বিল থেকে শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে। কোনো রকমে জীবন চলে যাচ্ছে তাদের।
ক. দুর্গার বয়স কত?
খ. বামুন হিসেবে বাস করার প্রস্তাবে হরিহর রাজি হলো না কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’র কোন দিক ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের মূলভাবকে কতটুকু ধারণ করে?”- যুক্তিসহ বুঝিয়ে লিখ।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক) দুর্গার বয়স দশ-এগারো বছর।
খ) প্রবল আত্মসম্মানবোধের কারণে বামুন হিসেবে বাস করার প্রস্তাবে হরিহর রাজি হলো না।
দশঘরার সদ্গোপ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি হরিহরকে প্রস্তাব দিয়েছিল—সে যেন নিজের পরিবারসহ তাদের গ্রামে গিয়ে বামুন হিসেবে বাস করে। এতে হরিহরের কিছু উপকারও হতে পারত। কিন্তু তখন হরিহরের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল, অনেক দেনাও ছিল। সে ভেবেছিল, যদি এই প্রস্তাবে রাজি হয়, তাহলে অন্য লোকেরা বুঝে ফেলবে যে সে কতটা দরিদ্র। তাছাড়া, নতুন জায়গায় যেতে চাইলে আগের পাওনাদাররাও এসে টাকা চাইবে। এসব চিন্তা করে হরিহর আত্মসম্মানের কথা ভেবে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
গ) উদ্দীপকে যে পরিবারগুলোর কথা বলা হয়েছে, তাদের জীবনযাপনের ধরণ অনেকটা ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের হরিহর ও সর্বজয়ার মতো।
গল্পে হরিহর গোমস্তার কাজ করে, আবার নানা জায়গায় গিয়ে ধর্মীয় কাজ যেমন—পুজো, দীক্ষা ইত্যাদি করেও কিছু আয় করে। আর তার স্ত্রী সর্বজয়া ঘরের সব কাজ নিজ হাতে করে সংসার চালাতে সাহায্য করে।
একইভাবে, উদ্দীপকে মকবুল, আবুল, সুরত—এই মানুষগুলো নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গাচাষ করে, লাকড়ি কাটে, মাঝি হিসেবে নৌকা চালায়, আবার কামলার কাজও করে। শুধু পুরুষ নয়, তাদের স্ত্রীরাও সংসারের খরচ চালাতে সাহায্য করে—কেউ পাটি বোনে, কেউ সবজি চাষ করে, কেউ শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে।
সব মিলিয়ে দেখা যায়, দুই ক্ষেত্রেই পুরুষ ও নারী পরিশ্রম করে সংসার চালায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত মানুষের জীবিকানির্বাহের চিত্র ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে হরিহর-সর্বজয়ার মতোই বাস্তব আর সংগ্রামী।
ঘ) উদ্দীপকে শুধু মানুষদের জীবনযাত্রা আর জীবিকা অর্জনের বিষয়টি দেখানো হয়েছে, তাই এটিকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাব নয়, বরং কিছুটা অংশ বলা যায়।
‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে লেখক শুধু গরিব মানুষের জীবনসংগ্রাম দেখাননি, বরং অপু ও দুর্গা নামে দুই ভাইবোনের আনন্দময়, কৌতূহলে ভরা শৈশবের কথাও তুলে ধরেছেন। তারা গরিব হলেও প্রকৃতির মাঝে মজা করে, খেলাধুলা করে, আর নানা নতুন জিনিস দেখে খুশি হয়। এই গল্পে যেমন হরিহর-সর্বজয়ার দারিদ্র্যের মধ্যে বেঁচে থাকার চিত্র আছে, তেমনি আছে শিশুদের আনন্দ, পরিবারের ভালোবাসা আর মায়ের মমতার ছোঁয়া।
কিন্তু উদ্দীপকে শুধু মকবুল, আবুল, সুরত আর তাদের স্ত্রীরা কীভাবে কষ্ট করে সংসার চালায়, সেই দিকটাই দেখানো হয়েছে—যেমন, জমি বর্গাচাষ, লাকড়ি কাটা, মাঝিগিরি, পাটি বোনা ইত্যাদি। এখানে শিশুদের জীবন, আনন্দ বা পরিবারের আবেগের জায়গাগুলো আসেনি।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের পুরো ভাব না তুলে ধরে, কেবল জীবনসংগ্রামের অংশটুকুই দেখিয়েছে। এজন্য একে গল্পটির আংশিক প্রতিফলন বলা ঠিক হবে।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন
২। বিধবা করিমনের সংসার যেন অভাবের কারখানা। তার উপর ছোটো ছেলেটা ‘কয়েকদিন ধরে যজ্বরে আক্রান্ত। গোরুর সামান্য দুধ বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করালেও এখন সে সামর্থ্য নেই আর। কারো কাছে ধার চাওয়ার মুখ তার আর নেই। যার কাছে যাবে সেই তো বলবে, আগের ধার পরিশোধ করো।
ক. হরিহর রায়ের জ্ঞাতি-ভ্রাতার নাম কী?
খ. ‘তখুনি কি রাজি হতে আছে?’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের কোন দিকটি তুলে ধরা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের করিমন কি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের সর্বজয়ার প্রতিচ্ছবি? তোমার মতামত উপস্থাপন করো।
৩। উদ্দীপক-১: পাড়ার বালকদের সর্দার ফটিক। সারাদিন বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো, এর-ওর গাছের ফল ছেঁড়া, নদীতে দাপাদাপি করা-এসবই তার কাজ। এক দণ্ড সে বাড়িতে থাকে না। শত দুরন্তপনার মাঝেও সে তার ছোটো ভাই মাখনকে আগলে রাখে।
উদ্দীপক-২: অভাবের সংসার লাবণ্যের। সংসারে সারাক্ষণই নাই নাই। এ যেন নুন আনতে পানতা ফুরোয়। পাওনাদারদের জ্বালায় সে অতিষ্ঠ। মাঝে মাঝে তার মনে হয় সব ছেড়ে পালিয়ে বাঁচি।
ক. হরিহর তাগাদার জন্য কোথায় গিয়েছিল?
খ. ‘আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা’- কথাটি কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপক-২-এ ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের প্রতিফলিত দিকটি তুলে ধরো।
ঘ. “উদ্দীপক-২-এর দিকটিকে ছাপিয়ে উদ্দীপক-১-এর বক্তব্য ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে।”- উক্তিটির সত্যতা তুলে ধরো।
৪। আমি মেলা থেকে
তালপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি
বাঁশি কই আগের মতো বাজে না
মন আমার তেমন কেন সাজে না।
তবে কি ছেলেবেলা
অনেক দূরে ফেলে এসেছি।
ক. অপু ও দুর্গা কোন পরিবারের শিশু?
খ. দুর্গা পা টিপে টিপে বাড়িতে প্রবেশ করল কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের যে দিক ইঙ্গিত করে তার ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘উদ্দীপকটিতে গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের জীবনের দুর্দশার চিত্র অনুপস্থিত।’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৫। বিভূতিভূষণ সর্ম্পকে বলতে গিয়ে একজন সাহিত্য সমালোচক বলেছেন, প্রকৃতি যে মানুষের জীবনে এত বিস্তৃতভাবে প্রভাব বিস্তার করে তা বিভূতিভূষণের সাহিত্য না পড়লে বোঝা যায় না। প্রকৃতি ও মানুষের চিরায়ত এক সর্ম্পক রয়েছে তাঁর সাহিত্যে, মানুষের জীবনযাপনকে সহজ-সরলভাবে তুলে ধরতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। জীবনকে তিনি প্রকৃতিঘনিষ্ঠ করেছেন। তাই প্রকৃতি ও জীবন তাঁর সাহিত্যে একাকার হয়ে গেছে।
ক. ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন উপন্যাস থেকে নেওয়া?
খ. ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পটি কীভাবে মানুষের চিরায়ত শৈশবকে স্মরণ করিয়ে দেয়?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘সাহিত্যে প্রকৃতি ও মানুষের জীবনকে একাকার করে বিভূতিভূষণ হয়ে উঠেছেন অনন্য এক লেখক।’- উদ্দীপক ও ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্প অবলম্বনে উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
৬। নূর, পুশি, আয়শা, শফি সবাই এসেছে,
আমবাগিচার তলায় যেন তারা হেসেছে।
রাঁধুনিদের শখের, রাঁধার পড়ে গেছে ধুম,
বোশেখ মাসের এই দুপুরে নাইকো কারো ঘুম।
বাপ-মা তাঁদের ঘুমিয়ে আছে এই সুবিধা পেয়ে,
বনভোজনে মিলেছে আজ দুষ্টু ক’টি মেয়ে।
ক. ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের রচয়িতা কে?
খ. দুর্গা অপুর পিঠে কিল বসিয়ে দেয় কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের শৈশব স্মৃতির কোন দিকটি ধারণ করে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ উপু’ গল্পের মূলভাবকে কতটুকু স্পর্শ করেছে বলে তুমি মনে করো? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৭। সাবিহা বেগমের একমাত্র সন্তান সাদমান ভীষণ চাল। সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ানোই তার কাজ। সে কখনো নদীর তীরে, কখনো বনেবাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। কোন বাগানে বরই পেকেছে, কাঁঠাল পেকেছে, কোন গাছের আম মিষ্টি- এসব খবর সাদমানের চেয়ে কেউ ভালো জানে না। তার মা সাবিহা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়। শত কষ্ট করেও সন্তানের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। যা নিয়ে সে সবসময় উদবিগ্ন ও ব্যস্ত থাকে।
ক. অপু ও দুর্গা কোন পরিবারের শিশু?
খ. ‘আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা’- কথাটি কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে সাদমানের আচরণে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের যে দিকটির ছায়াপাত ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের সাবিহা বেগম ও ‘আমি-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের সর্বজয়ার উদ্দ্বিগ্নতার স্বরূপ একই।”- বিশ্লেষণ করো।
৮। শিহাব মেলা থেকে তালপাতার একটি বাঁশি কিনে এনেছে বাঁশিটা আগের মতো বাজে না আর। এখন কোনো কিছুই তার ভালো। লাগে না। তাই সে ভাবে তবে কি ছেলেবেলা অনেক দূরে ফেলে এসেছি।
ক. দুর্গার বয়স কত?
খ. ‘তোমার তো আবার গল্প করে বেড়ানো স্বভাব।’- এ কথাটি। বুঝিয়ে লেখো।
গ. উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের যে দিক ইঙ্গিত করে তার ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘উদ্দীপকটিতে গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের জীবনের দুর্দশার চিত্র অনুপস্থিত।’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
৯। ঝিলমিলের বয়স পাঁচ বছর, তার একটি পুতুল আছে। ঝিলমিল আজ ভয়ানক ব্যস্ত। আজ কি না তার পুতুলের জন্মদিন, তাই খুব খাওয়ার ধুম লেগেছে। ছোট্ট টেবিলের উপর ছোট্ট ছোট্ট থালা-বাটি সাজিয়ে তার মধ্যে কী চমৎকার করে খাবার তৈরি করে রাখা হয়েছে। আর চারিদিকে সত্যিকারের ছোট্ট ছোট্ট চেয়ার সাজানো রয়েছে, পুতুলেরা বসে খাবে বলে।
ক. গরাদ কী?
খ. ‘তখুনি কি রাজি হতে আছে?’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটির ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উক্ত সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের সর্বজয়ার ঘর ছেড়ে এক দিকে বেরিয়ে যেতে চাওয়ার কারণ নয়।”-মূল্যায়ন করো।